Friday, October 8, 2010

পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার

পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার খুব একটা পরিচিত রোগ নয় এবং আমাদের চারপাশে এমন রোগীর সংখ্যাও খুব কম। তবে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত শতকরা চল্লিশ ভাগ রোগীর বয়সই যেহেতু চল্লিশ বছরের নীচে তাই এর সম্পর্কে জেনে নেয়াটা সকল পুরুষের জন্যই জরুরী বলে মনে করা হয়।
অনেক সময়ই রোগী বুঝতে পারেনা যে তার পুরুষাঙ্গের শীর্ষে (গ্লান্স পেনিস-Glans penis) যে ঘা টি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা একটি ক্যান্সার। এর একটা কারন এই যে এই ক্যান্সারের অধিকাংশ রোগীরই মুসলমানি বা খতনা করানো থাকেনা, তাছাড়া ঘা টিতেও কোনো ব্যথা বেদনা থাকেনা। গ্লান্স পেনিসেই শুধু ক্যান্সার হয়ে থাকে আর এমন একটি ঘা অনেক সময়ই গ্লান্স পেনিসে শুধু সাদা একটি দাগ হিসেবে শুরু হয়, অবশ্য কারো কারো ক্ষেত্রে এটা একটা উচু গোটার মতোও শুরু হতে পারে। রোগীর কোনো ব্যথা না থাকলেও এজন্য সে কিছুটা অস্বস্তিকর অনুভুতির শিকার হতে পারে, কারো কারো এই ক্ষত থেকে সামান্য ডিসচার্জ বা রস ও বের হতে পারে। তাই বেশীর ভাগ রোগীরাই এই ক্ষত’র প্রতি উদাসীন থাকে এবং এই সুযোগে ক্যান্সার টি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কোনো কোনো সময় ক্যান্সারের এই ঘাটিতে ব্যাক্টেরিয়া আক্রমন করে থাকে, বিশেষ করে ঐ সময়টাতেই রোগীরা একে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। দেরী হয়ে গেলে এই রোগ বেশ ছড়িয়ে যায় এবং গ্লান্স পেনিস ফুলকপির মতো ফুলে উঠতে পারে, তা থেকে রক্তপাত ও হতে পারে, এ সময় কুচকিতেও সুপারির মতো শক্ত গোটা উঠতেও দেখা যায়। এই ক্যান্সার বৃদ্ধি পেতে পেতে যখন উরুর বা পেটের ভেতরের রক্তনালীকে সংক্রমিত করে ফেলে তখন অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাতের ফলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
আগেই বলেছি এই ক্যান্সারের রোগীদের মধ্যে প্রায় কারোরই খাতনা করা থাকেনা তাই ক্যান্সারের ঘাটি দেখতে হলে শুরুতেই লিঙ্গের সমুখের বাড়তি চামড়া বা prepuceal skin কেটে নিতে হয়। এর পর ঘা থেকে বায়োপসি নিয়ে নিশ্চিত হতে হয় যে ক্যান্সার হয়েছে। একবার নিশ্চিত হওয়া গেলে সাথে সাথে এর চিকিৎসা শুরু করতে হয়। চিকিৎসার শুরুতেই রোগীকে খাতনা করিয়ে নিতে হয় এবং তার পর রেডিওথেরাপী দিতে হয়। শতকরা ৬০-৭০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই এই ক্যান্সার এতে সাড়া দেয়। রেডিওথেরাপী কাজ না করলে এবং শুধু গ্লান্স পেনিসে যদি এই ক্যান্সার টি বড় আকারে থেকে থাকে তাহলে পুরুষাঙ্গের মাথাটি কেটে ফেলতে হয়, তবে ক্যান্সার আরো ছড়িয়ে পরলে গোড়া থেকেই পুরুষাঙ্গটি কেটে ফেলে দিতে হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখা ভালো যে শৈশবের শুরুতে যাদের মুসলমানী বা খাতনা করা হয় তাদের এই ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা একবারে নেই বললেই চলে, তবে আরেকটু বড় হয়েও যারা খাতনা করায় তাদের মধ্যও এই ক্যান্সার হবার প্রবনতা বেশ কম।

1 comment: